যে কারণে ৪৬তম ওভারে বল করেছেন গুলবাদিন
গতকাল পাকিস্তানের খুশিতে কেঁদেছে তাদের পড়শী। তীরে এসে তরী ডোবাল আফগানিস্তান।
শেষ ৫ ওভারে ৪৬ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। আর আফগানদের বোলিং ব্যর্থতায় টেলঅ্যান্ডাররা সেই রান ডিঙিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। তবে এর জন্য শতভাগই দায়ী আফগান অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব। ৪৬তম ওভারটি করে ১৮ রান দেন তিনি। আর তাতেই জয়ের পথ সুগম করেন ওয়াহাব রিয়াজরা।
ওই ওভারে লাইন-লেংথকে ভুলে গিয়ে ফুলটস আর বাজে স্লোয়ারের পশরা বসিয়ে ম্যাচের সবচেয়ে জঘন্যতম ওভার উপহার দিয়েছেন গুলবাদিন।
এ সময়ে আফগান অধিনায়কের এমন খরচে বোলিং নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকে তো তার ওপর ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ এনেছেন। তার অধিনায়কত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
প্রচণ্ড ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন আফগান সমর্থকরা। শুধু আফগান সমর্থকরাই নয়, বেশিরভাগ ক্রিকেটপ্রেমীও মুণ্ডুপাত করছেন গুলবাদিনের।
গুলবাদিন নাইবের ওপর এমন সব ক্ষোভ স্বাভাবিকই বটে। ওই মুহূর্তে ম্যাচে তার চেয়ে ভালো করা বোলার থাকতে কেন নিজেই বল করতে এলেন আর ম্যাচটা পাকিস্তানের হাতে তুলে দিলেন, সেই প্রশ্নে জর্জরিত গুলবাদিন হতেই পারেন।
ক্রিকেটবিশ্বে এখন একটিই প্রশ্ন- ৪৬তম ওভারে তিনি কেন নিজেই বল করলেন? যেখানে ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করছিলেন আফগান স্পিনাররা। শিনোয়ারি, রশিদ ও মুজিবের ৫ ওভারই বাকি ছিল।
স্পিনারদের দিয়েই বাকি চার ওভার শেষ করাতে পারতেন গুলবাদিন। কিন্তু আগের ৮ ওভারে ৪৭ রান দেয়ার পরও এমন গুরুত্বপূর্ণ ওভারের সময় নিজের হাতে বল তুলে নিলেন গুলবাদিন।
সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন আফগান অধিনায়ক। তিনি জানালেন, কেন ওই ওভারটি করতে নিজেকেই পছণ্দ করেছিলেন তিনি।
আফগান অধিনায়ক বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম যে, সব বোলার ওদের লক্ষ্য নয়। এমন মুহূর্তে স্পিনকে ওভার বাউন্ডারিতে পরিণত করতে পারতেন পাক ব্যাটসম্যানরা। তাই পেস আক্রমণই ঠিক হবে বলে ভেবেছিলাম। অবশ্য হামিদ (হাসান) থাকলে আমি ওই ওভারটি তার হাতেই তুলে দিতাম। ও থাকলে পুরো ম্যাচেই তিন-চার ওভারের বেশি বল করতাম না। কারণ এ উইকেটে বল করার মতো পর্যাপ্ত গতি আমার নেই।’
তবে পরিকল্পনাটি কাজে লাগেনি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি দলেরই নিজস্ব পরিকল্পনা থাকে আর ৪৬তম ওভারটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে ওভারে আমি ১৮ রান দিয়েছি। এটি মোটেও ভালো হয়নি।
গুলবাদিনের এমন ব্যাখ্যা যে সমর্থকদের মোটেও সন্তুষ্ট করতে পারেনি তা বলাই বাহুল্য। কারণ একটু আধটু ক্রিকেট বোঝে এমন যে কেউই বলবেন, গতকালের ওই উইকেটটি ছিল সম্পূর্ণ স্পিনবান্ধব। আফগান স্পিনারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েছিল পাকিস্তান। উইকেটও স্পিনারদের সাহায্য করছিল দারুণভাবে। ম্যাচের ওই মুহূর্তে ক্লাব পর্যায়ের কোনো অধিনায়কও সম্ভবত পেসারদের হাতে বল তুলে দেবেন না।
উল্লেখ্য, গতকালের ম্যাচে দুই ওভার বল করেই হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন দলের সেরা পেসার হামিদ। আর তাই পেস আক্রমণের একটা দায়িত্ব এসে পড়ে গুলবাদিন নাইবের কাঁধে।
তবে সে যাই হোক, ৪৬তম ওভারটি আফগান অধিনায়ক নিজে না করে ম্যাচে দুর্দান্ত বল করা পার্টটাইমার বোলার শিনোয়ারিকে দিয়ে করাতে পারতেন বলে মত দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।


কোন মন্তব্য নেই