পিলখানা হত্যাকাণ্ড কারাগার থেকে ধাপে ধাপে মুক্তি পাচ্ছেন বিডিআর সদস্যরা
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাড়ে ১৫ বছর ধরে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে থাকা ১৩৬ জন তৎকালীন বিডিআর সদস্য জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের মধ্যে ১২৬ জন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বাকিদের ঠিকানা ও নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে ধাপে ধাপে কারাগার থেকে বের করা হবে। তাদের মুক্তির খবরে স্বজনরা সকাল থেকে কারাগারের গেটে এসে অপেক্ষা করছেন। হত্যা মামলায় খালাস পেলেও বিস্ফোরক মামলায় তারা কারাগারে আটক ছিলেন।
জানা যায়, গত রোববার ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর অস্থায়ী আদালতে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া শুনানি শেষে বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার জামিনপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
বুধবার রাতে তাদের জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এসব নথিপত্র কারাগারে পৌঁছানোর পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আসামিদের নাম-ঠিকানা ও নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে এক নম্বর ইউনিট, দুই নম্বর ইউনিট ও হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে ৩৫ জনের বেশি ছাড়া পেয়েছেন। কারাগারের গেটে আসলে তাদেরকে স্বজনরা ফুল দিয়ে ও মিষ্টি খাইয়ে বরণ করে নেন। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
ছাড়া পেয়ে তারা জানান, তাদেরকে বিনা বিচারে অন্যায়ভাবে এত বছর আটক রাখা হয়েছে। তারা আবারো চাকরি ফেরত পাওয়াসহ সকল সুযোগ-সুবিধা দাবি করছেন। একই সঙ্গে যারা বিডিআর হত্যা মামলার প্রকৃত দোষী তাদেরকে খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি করেন তারা।
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৪১ জন বন্দি বের মুক্তি পেয়েছেন। এ সময় কারাগারের সামনে স্বজনদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।
সেই বিদ্রোহের পর সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম বদলে রাখা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পরিবর্তন আসে পোশাকেও। এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে যায় ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের।
অন্যদিকে হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। তাতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। আর খালাস পান ২৭৮ জন।

কোন মন্তব্য নেই