দক্ষিণ সুরমায় শ্রমিকদের প্রতিবাদ সভা পরিবহণ শ্রমিকদের উপর জুলুম নির্যাতন ও চাঁদাবাজী বন্ধের দাবি
অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে চাঁদাবাজী ও নিরীহ শ্রমিকদের উপর জুলুম নির্যাতনের অবিযোগ এনে সিলেট অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৫জনকে আসামী করে সিলেট জেলা হিউম্যান হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং- চট্ট ১৩২৬ এর একজন শ্রমিক সদস্য সাহাব উদ্দিন বৃহস্পতিবার (১২ মে) একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং- ৬৪৩/২০২২। মামলার আসামীরা হলেন- খাদিমনগরের বাহুবল গ্রামের রই মিয়ার ছেলে রুনু মিয়া মঈন, পীরের চক গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে ইনছান আলী, দাশপাড়া গ্রামের মৃত ইরফান আলীর ছেলে সাবউদ্দিন সাবু, পীরের চকের মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ, খাদিমনগর উত্তর মোকামের গোল গ্রামের ফয়ছল আহমদ। মামলার বাদী শ্রমিক সদস্য সাহাব উদ্দিনের অভিযোগ তার দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী রুনু মিয়া মঈন ২০০৩ সালে উক্ত সংগঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও অবৈধভাবে নিজেকে সভাপতি দাবি করে চাঁদাবাজি ও প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এমতাবস্তায় প্রধান আসামী রুনু মিয়া মঈন ও তার সহযোগীদের চাঁদাবাজি ও অন্যায় কার্যক্রমের প্রতিবাদ করলে রুনু মিয়া মঈন ও তার সহযোগীরা সাহাব উদ্দিন ও শ্রমিকদের মারধর করে গুরুতর জখম করেন। এ ঘটনায় শ্রমিক আব্দুল আহাদ বাদী হয়ে রুনু মিয়া মঈন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১৬ জানুয়ারি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- জি আর ৬২/২০২২। উক্ত মামলায় জামিন না নিয়ে নিজেকে সিলেট জেলা হিউম্যান হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দাবি করে ২০০৫ ইংরেজি থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত শ্রমিকদের কাছ থেকে আদায়কৃত টাকা আত্মসাত করেন। এ ঘটনায় সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে রুনু মিয়া মঈন ও ইনছান আলী সহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে শ্রম আদালত সিলেটে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- বি এল এফ ২/২০২২। মামলার প্রেক্ষিতে আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর কর্তৃক উপরোক্ত দুজনকে অবৈধ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উল্লেখ করে ৩০ দিনের মধ্যে সংগঠনের নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ প্রদান করেন। অভিযোগ রয়েছে রুনু মিয়া মঈনের নেতৃত্বে ইনছান আলী অবৈধভাবে হিউম্যান হলার চালকদের কাছ থেকে নিজেদের তৈরি রশিদ দিয়ে প্রতিদিন কদমতলী লেগুনা স্ট্যান্ড, কোর্ট পয়েন্ট, হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বর সহ বিভিন্ন স্ট্যান্ড থেকে দৈনিক প্রায় ১ লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। যা প্রতি মাসে ৩৭ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার মতো দাঁড়ায়। ধোপাদিঘীর দক্ষিণ পারে ২৮ এপ্রিল বিকেল ৩টার দিকে রুনু মিয়া মঈন ও তার সহযোগীরা পৌছালে আসামী রুনু মিয়া মঈন ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করলে সাহাব উদ্দিন সহ অন্যান্য শ্রমিকরা চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে রুনু মিয়া মঈন ক্ষিপ্ত হয়ে সাহাব উদ্দিনকে প্রাণে হত্যার ভয় দেখিয়ে মারার জন্য এগিয়ে আসলে অন্যান্য শ্রমিকরা এগিয়ে এসে তাকে রক্ষা করেন। এসময় রুনু মিয়া মঈন হুমকি দিয়ে বলেন প্রতিদিন ৫০টাকা করে চাঁদা না দিলে গাড়ি চালাতে দিবেন না। মামলার আসামী রুনু মিয়া মঈন ও ইনছান আলী সংগঠনের বৈধ কোন সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক এবং সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন প্রায় ২৫০০ গাড়ি থেকে ৫০টাকা করে চাঁদা আদায় করে থাকেন। আসামীদের চাঁদাবাজী ও শ্রমিকদের প্রতি জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বরে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা অবিলম্বে শ্রমিকদের উপর আসামীদের জুলুম, অত্যাচার ও চাঁদাবাজী বন্ধের প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। বক্তারা অবৈধভাবে সংগঠনের ক্ষমতা দখল করে থাকা রুনু মিয়া মঈন ও ইনছান আলীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের প্রতি আবেদন জানানো হয়।


কোন মন্তব্য নেই