ধর্ষণের মামলায় জাপা নেতা লোটনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা
এক নারীকে ধর্ষণের মামলায় জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
রোববার
(২৯ জুলাই) ঢাকার এক নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক
আবু নাসের মো. জাহাঙ্গীর আলম তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।
বাদীর
আইনজীবী কাজী হুমায়ুন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই তরুণীর অভিযোগ
তদন্তে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা বাদীসহ তিন জনের জবানবন্দি নেন।
তাতে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে তিনি রোববার ট্রাইব্যুনালে
প্রতিবেদন জমা দেন।
ঢাকার
বাংলাবাজারের পুস্তক ব্যবসায়ী সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল বুক
সেন্টারের (জাতীয় গ্রন্থ সংস্থা) পরিচালনা পষর্দের সদস্য লোটনের ১১ জুলাই
ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ৩২ বছর বয়সী ওই নারী। বিচারক অভিযোগ শুনে ২৭
জুলাইয়ের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন।
মামলার
অভিযোগে বলা হয়, আসামি লোটন ‘সিকদার অ্যান্ড পাবলিকেশন’ ও ‘আকাশ
পাবলিকেশনের’ মালিক। অন্যদিকে বাদী একজন লেখিকা হওয়ায় আসামির সঙ্গে পরিচয়
হয়। আসামি লোটনের ‘সংগঠক ও সংগঠন’ রাজনৈতিক বইটি লিখতে সঙ্গে বাদী তার
সহকারী লেখিকা হিসেবে কাজ করেন। পরে আসামির প্রতিষ্ঠান ‘আকাশ পাবলিকেশন’
থেকে প্রকাশিত ‘সময়ের আয়নায় পল্লীবন্ধু’ ছবি অ্যালবামের নির্দেশনা ও
অঙ্গসজ্জা হিসেবেও বাদী কাজ করেন।
ওই
কাজের জন্য বাদী আসামির সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতেন। তখন আসামি বাদীকে প্রায়ই
ইভটিজিংমূলক কথাবার্তা বলতেন। আসামি বাবার বয়সী ভেবে বাদী বিষয়টি এড়িয়ে
যেতেন। এছাড়া আসামি বিভিন্ন সময় ফোনে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ম্যাসেঞ্জারে
বাদীর কাছে নোংরা ছবি পাঠাতেন এবং ভিডিও কলে নোংরা প্রস্তাব দিতেন। কাজের
প্রয়োজনে আসামির কাছে যেতে হতো বলে বাদী কঠোর প্রতিবাদ করতে পারতেন না।
মামলায়
বলা হয়, চলতি বছর ১ জানুয়ারি আসামির জন্মদিনে তার অনুরোধে বাদী রাজধানীর
কোতয়ালী থানার বিউটি বোর্ডিংয়ে যান। সেখানে কেক কাটার পর আসামি বাদীকে
বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে তুলেন। পথে ড্রাইভার ও তার সহযোগীদের
গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে রাত ৯টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর
এলাকার একটি নিরিবিলি জায়গায় থেমে গাড়িতেই বাদীকে ধর্ষণ করেন। মোবাইল ফোনে
ধর্ষণের ছবি ও ভিডিওধারণ করেন। বিষয়টি কাউকে জানালে ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে
ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে পরে তাকে বাসায় পৌঁছে দেন।
আসামির
কাছে নোংরা ছবি ও ভিডিও থাকায় সে বাদীকে ব্ল্যাকমেইল করে। এরপর বিভিন্ন সময়
আসামির পাবলিকেশন হাউজ ও বিউটি বোডিংয়ে একাধিকবার বাদীকে ধর্ষণ করেন।
সর্বশেষ আসামি বাদীকে বিয়ে করবেন বলে ডেকে এনে ৩০ জুন ১২টা থেকে ২টার মধ্যে
বিউটি বোডিংয়ের দোতলার একটি কক্ষে ধর্ষণ করেন।


কোন মন্তব্য নেই